কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাংলাদেশি জন্মসনদ! যা পাওয়া যায় দেশের জন্ম ও মৃত্যুসনদ সার্ভারে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আবেদনকারীর নাম ‘জাস্টিন ট্রুডো’। সেই জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে পাবনা থেকে। অনুসন্ধানের পর এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন। অতঃপর জানা গেলো, সেই বাংলাদেশি জন্মসনদ বাতিল করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল যাহিদ হোসেন। জানিয়েছেন, পাবনার জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত করবেন।
এর আগে, এমন তথ্য পেয়ে অনুসন্ধানে নামে যমুনা টিভি। উত্তর খুঁজতে হাজির হয় পাবনায়। কারণ, আলোচিত সেই জন্মসনদে জন্মস্থান দেখানো হয়েছে পাবনায়। খোঁজ পাওয়া যায়, পাবনার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে করা হয়েছে এটি। পাশাপাশি সেখান থেকে আরও কিছু অবৈধ জন্মসনদ বানানো হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে এসব অবৈধ জন্মসনদ করে দিতেন ওই ইউনিয়নের কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমন।
জানা যায়, ওই লোকের আসল নাম ছিল আজিজুল। সেটাকে বদলে করা হয়েছে জাস্টিন ট্রুডো। অবৈধ জন্মসনদ বানানো ওই ইউনিয়নের কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমনের কাছেও হাজির হয়েছিল যমুনা নিউজ।
যমুনার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ১ লাখ টাকায় অবৈধ জন্মসনদ বানিয়ে দিতে রাজি হন। কথা দেন, আবেদনের পর নিজেই সব সম্পন্ন করিয়ে দেবেন। এ বিষয়ে চক্রের বহুজনের সঙ্গে ‘প্রয়োজনীয়’ আলাপও সারেন তিনি।
জাস্টিন ট্রুডোর নামের আবেদনটিও হয়েছিল একইভাবে। পরদিন আবারও আহম্মদপুর ইউনিয়নে যায় যমুনা নিউজ। ক্যামেরা দেখে কোনো উপায় না পেয়ে সবকিছু স্বীকার করেন অপারেটর নিলয়। বিব্রত হন ইউনিয়ন সচিব, লজ্জিত দাবি করেন চেয়ারম্যান।
আহম্মদপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্লার কাছে জানতে চাওয়া হয়– কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জন্মসনদ আপনার ইউনিয়ন থেকে সম্পন্ন হয়েছে। এর জন্য আপনার কি গর্ববোধ হচ্ছে? তিনি বলেন, আমার কাছে এটি লজ্জার বিষয়। কারণ, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তার নিবন্ধন হয়েছে আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। এটা আমার জন্য খুবই লজ্জার।
বৈধভাবে জন্মসনদের সংশোধন করানোর সময় নানা ঝক্কিতে পড়েন মানুষ। উল্টোদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর নামেও এক রাতে করা যায় জন্মসনদ। তাহলে কতটা সুরক্ষিত দেশের এই নিবন্ধন সার্ভার?
ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারিক হিকমত বলেন, আমরা এখন বুঝতে পারলাম। যেহেতু আমরা সার্ভার নিয়ে কাজ করি, সুতরাং কে কয়টায় কাজ করেছে, তা ধরা পড়েছে আমাদের কাছে। এখন আমরা অ্যাকশন নেব।